দিলরুবা কবির পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তী সময়ে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অব এডুকেশন ডিগ্রি অর্জন করে বোস্টন, সিঙ্গাপুর ও ঢাকায় শিক্ষকতা করেন। এছাড়া ব্র্যাকের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের জন্য বেশকিছু পাঠ্যক্রম চালু করেন। তার প্রকাশিত বইয়ের নাম ‘পাঠক্রমে সৃজনশীল কাজ’। বর্তমানে তিনি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কিস্টোন ও মনোয়ারা ইসলাম-তাজুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারপারসন। শৈলান প্রবীণ নিবাসের উদ্যোক্তা। বয়স্ক জনগোষ্ঠী, তাদের সমস্যা, যত্নআত্তি, বৃদ্ধ নিবাস প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কথা বলেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা
বিশ্বের প্রতিটি উন্নত দেশে প্রবীণদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও বাংলাদেশে নেই। অথচ আমরা ডোমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সময়ে বাস করছি। অর্থাৎ দেশের জনগণের বড় অংশ তরুণ কিন্তু একসময় বয়স্কদের সংখ্যা বাড়বে। তাদের জন্য এখন থেকেই কী করা প্রয়োজন?
মধ্যম আয় ও উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বেড়ে ওঠার পথে এটাই আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রবীণরা কোনো একক জনগোষ্ঠী নয়। তাদের মধ্যে প্রকারভেদ আছে। মোটাদাগে বিষয়ভিত্তিক কয়েকটি ভাগে তাদের বিভক্ত করা যায়—১. পারিবারিক অবস্থা: ক) পরিবার দেখভাল করতে সমর্থ; খ) পরিবার দেখভাল করতে অসমর্থ। ২. আর্থিক সামর্থ্য: ক) সচ্ছল; খ) অসচ্ছল। ৩. শারীরিক অবস্থা: ক) চলাচলে সক্ষম; খ) চলাচলে অক্ষম; গ) গুরুতর অসুস্থ। প্রত্যেকটি শ্রেণীর জন্য আলাদা সমাধান নিয়ে ভাবতে হবে। সরকার পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারে।
প্রবীণদের অনেকেই নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেন, অনেকেই আত্মহত্যা করছেন বা নিভৃতে মারা যাচ্ছেন, কেউ খবর রাখছে না। সন্তানরা বিদেশ থাকছেন। কীভাবে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে?
পরিবারই প্রবীণদের জন্য শ্রেষ্ঠ আশ্রয়স্থল। তবে এক্ষেত্রে দুটো ভাগ করতে হবে। একদল যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও মা-বাবাকে অবহেলা করে। তাদের ক্ষেত্রে মা-বাবার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩ বর্ণিত শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু যারা আর্থিকভাবে অসমর্থ বা দেশের ভেতরে বা বাইরে অভিবাসনের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মা-বাবার দেখভাল করতে পারেন না, তাদের সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখতে হবে। তারা যাতে মা-বাবার দেখভালের জন্য পরিবারের বাইরে কোনো ব্যবস্থা করতে পারেন, সে বিষয়ে সহায়তা করতে হবে। সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো ম্যাজিক বুলেট নেই। আমরা উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পারি। তবে সবচেয়ে বড় কথা, সামাজিক বন্ধন জোরদার করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আগে যেমনটি বলেছি, পরিবারই প্রবীণদের জন্য শ্রেষ্ঠ আশ্রয়।
প্রবীণ নিবাস করাই কি প্রবীণদের জন্য যথেষ্ট নাকি আরো পদক্ষেপ প্রয়োজন?
প্রবীণদের প্রকারভেদ আছে। প্রবীণ নিবাস অনেক সমাধানের একটা মাত্র। এটি কেবল চলাচলে সক্ষমদের জন্য। এখানেও দুটো ভাগ আছে। সচ্ছলদের জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রবীণ নিবাস, যেখানে সেবাগ্রহীতা পূর্ণ ব্যয় (বিনিয়োগকারীর মুনাফাসহ) বহন করবেন। আর অসচ্ছলদের জন্য স্বল্প বা বিনা ব্যয়ের প্রবীণ নিবাস; যার ব্যয়ভার দানশীল ব্যক্তিরা আংশিক বা সম্পূর্ণ বহন করবেন। আমাদের নিবাসটি বিনা ব্যয়ের প্রবীণ নিবাস। এছাড়া চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য অ্যাসিস্টেড হোমের ব্যবস্থা করতে হবে। মরণাপন্ন রোগীদের জন্য হসপিসের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার সবার জন্য পেনশনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে। ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা গেলে এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রবীণদের জন্য কী করা যেতে পারে, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে যদি বলতেন?
বাণিজ্যিক ও সামাজিক অর্থায়ন দুটিই প্রয়োজন হবে। বাণিজ্যিক ব্যংকগুলো যেমন হোটেল, হাসপাতাল ব্যবসায় লগ্নি করে, তেমনি সচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য প্রবীণ নিবাসে তারা বিনিয়োগ করতে পারে। এসব নতুন ক্ষেত্রে যারা বিনিয়োগ করবেন, তাদের সাময়িক কর প্রণোদনা প্রদানের বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
অসচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য প্রবীণ নিবাস নির্মাণে সরকারি ও দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তা প্রয়োজন হবে। অসুস্থ প্রবীণদের চিকিৎসার জন্য জেরিয়ারট্রিক মেডিসিন বিভাগ ও বিশেষ ওয়ার্ড খুলতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, প্রবীণদের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান নির্ধারণ করতে হবে।
আইনে প্রবীণদের দেখভালের দায়িত্ব সন্তানদের ওপর ন্যস্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাহলে প্রবীণ নিবাসের দরকার কী?
বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবা পরিবারের সবার সঙ্গে আনন্দে দিন কাটাবেন। এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না এবং এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু সমস্যা বেধেছে বাস্তবতা নিয়ে। যে ছেলে নিজের পরিবারের ভরণপোষণ করতে পারেন না, তিনি কীভাবে মা-বাবার ভরণ-পোষণ করবেন? এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জীবিকার প্রয়োজনে দেশের ভেতরে ও বাইরে অভিবাসন। ছেলেমেয়েকে যদি নিজ গ্রাম বা দেশের বাইরে আবাস গড়ে তুলতে হয় এবং মা-বাবাকে যদি সেখানে নেয়া সম্ভব না হয় বা তারা যেতে না চান তাহলে সন্তানরা কীভাবে তাদের দেখভাল করবেন? আর যাদের সন্তান নেই এবং যারা বিধবা অথবা বিপত্নীক, তাদের কী হবে?
শৈলান প্রবীণ নিবাস করলেন কেন?
নিজে প্রবীণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যের চারটি সমস্যা—নিঃসঙ্গতা, জরা ও ব্যাধি, দারিদ্র্য এবং আমাদের পারিবারিক বন্ধনের শিথিলতা—সম্পর্কে ভাবতে শুরু করি। কীভাবে এসব সমস্যার মোকাবেলা করা যায়, সেটা চিন্তা করে প্রথমে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য একটি প্রবীণ নিবাস করার ইচ্ছা মাথায় আসে। পরে মনে হলো, দরিদ্র প্রবীণদের সমস্যা আরো প্রকট। এছাড়া উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য প্রবীণ নিবাস নির্মাণ ব্যয়বহুল। এসব বিবেচনা করে আমরা হতদরিদ্রদের জন্য শৈলান প্রবীণ নিবাস প্রতিষ্ঠা করি।
প্রবীণ নিবাসটি কোথায় এবং সেখানে আপনারা প্রবীণদের কী সুবিধাদি দেবেন?
ঢাকার অদূরে ধামরাই উপজেলার শৈলান গ্রামে আমরা ৮০ শয্যার প্রবীণ নিবাস প্রতিষ্ঠা করেছি। পুরুষ ও নারীদের জন্য এখানে স্বতন্ত্র দুটি উইং আছে। এ নিবাসে আমরা হতদরিদ্র প্রবীণদের বিনামূল্যে বাসস্থান, পোশাক, আহার ও নিকটস্থ গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সহযোগিতায় চিকিৎসাসেবা দেব। নিবাসটিতে বৃদ্ধদের থাকার উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, যাতে তারা একটি কর্মব্যস্ত অবসরজীবন কাটাতে পারেন। এছাড়া তাদের পরিবার চাইলে তারা ঈদ, পূজা-পার্বণ, বিয়ে, জন্মদিন ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আবার প্রবীণ নিবাসে ফিরে আসতে পারবেন।
প্রবীণ নিবাসে ভর্তির জন্য কী করতে হবে। কীভাবে বাসিন্দা নির্বাচন করবেন?
শৈলান প্রবীণ নিবাসে বসবাসের যোগ্যতা চারটি—(১) প্রবীণ, অর্থাৎ বয়স ৬০-এর কাছাকাছি হতে হবে; (২) দরিদ্র হতে হবে; (৩) চলাচল করতে সক্ষম হতে হবে—নিজের কাজ, যেমন বিছানা করা, মশারি টানানো, ঘর পরিষ্কার করায় সক্ষম হতে হবে এবং ৪) ভালো মানুষ হতে হবে, অর্থাৎ ভিক্ষুক, নেশায় আসক্ত, অপরাধসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এখানে গ্রহণ করা হবে না।
হতদরিদ্র প্রবীণ নিজে অথবা তার পক্ষ থেকে অভিভাবক বা অন্য কেউ আমাদের নির্ধারিত ফরমটি পূরণ করে জমা দেবেন। কিছু মাঝ পর্যায়ের পেশাদার নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। তারা শর্তগুলো বিবেচনা করে আবেদনপত্র বাছাই ও আমাদের ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে সুপারিশ করবেন। ট্রাস্টি বোর্ড বাসিন্দা নির্বাচন চূড়ান্ত করবে।
পরিচালন ব্যয় কীভাবে নির্বাহ এবং কীভাবে বিনামূল্যে সেবা প্রদান করবেন?
জমি ও এর অন্য একটি স্থাপনা আমাদের পরিবারের ছিল। আমরা এগুলোর মালিকানা ট্রাস্টকে হস্তান্তর করেছি। বাকি অর্থ এসেছে আমাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, শুভানুধ্যায়ী ও হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে।
মনে রাখতে হবে এটা কোনো হাসপাতাল নয়। তাই গুরুতর অসুস্থ বা পঙ্গু ব্যক্তিদের এখানে সেবা প্রদানের সুযোগ নেই। তবে নিবাসে অবস্থানের সময় কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ও পঙ্গু হয়ে পড়লে উপযুক্ত সেবা প্রদানে সক্ষম প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হবে। অর্থাৎ কোনো বাসিন্দাকেই পরিত্যাগ করা হবে না। কেউ মারা গেলে মৃতের অভিভাবক, আত্মীয়-স্বজনদের ইচ্ছা অনুযায়ী দাফন-কাফন বা সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে।
আমরা অনুদানের মাধ্যমে একটি পরিচালন ব্যয় তহবিল গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছি। এছাড়া দানশীল যে কেউ এক বা একাধিক প্রবীণের বার্ষিক খরচ দিয়ে স্পন্সর হতে পারবেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান কিস্টোনের সাবেক কিছু সহকর্মী দেশে-বিদেশে নামকরা প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে কাজ করছেন। তারা নিজেরা সাহায্য করা ছাড়াও শৈলান প্রবীণ নিবাসের জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন। কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান করতে পারলে পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করা সমস্যা হবে না বলে আমি মনে করি।
নিবাসটি পরিচালনায় সামনে আপনারা কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
শৈলান প্রবীণ নিবাসের চারতলা ভবন নির্মাণ হওয়ার পর আমরা যখন বাসিন্দা নির্বাচনে মন দিয়েছি, তখন দেখা গেল আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্ল্লিষ্ট দপ্তরসহ বিভিন্ন এনজিওর কাছেও চিঠি লিখেছি। সাড়া না পাওয়ার কতগুলো কারণ আছে, যার মধ্যে প্রধান হলো প্রবীণ নিবাস সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা। ওল্ড এজ হোম বা বৃদ্ধাশ্রমের প্রতি আমাদের একটি বিরাগ আছে; যার ভিত্তি ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অনুশাসন। আমাদের ইসলাম ধর্মে মা-বাবাকে অতিযত্নে লালন-পালনের জন্য সন্তানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্য ধর্মেও অনুরূপ বিধান আছে। মা-বাবার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩-তে প্রবীণদের দেখভালের দায়িত্ব সন্তানদের ওপর ন্যস্ত করে প্রতিপালনে ব্যর্থতার জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। নচিকেতার বিখ্যাত গান ‘বৃদ্ধাশ্রম’-এ সন্তানের বিলাসী জীবনযাপনের বিপরীতে মা-বাবার বৃদ্ধাশ্রমে করুণ জীবনযাপনের কাহিনী বিধৃত আছে। তাই মা-বাবাকে দেখতে আর্থিক ও বাস্তবসম্মত কারণে (দেশের ভেতরে ও বাইরে অভিবাসন) অসমর্থ হলেও সন্তানরা তাদের মা-বাবাকে প্রবীণ নিবাসে পাঠাতে আগ্রহী নন, পাছে লোকে কিছু বলে। এছাড়া দারিদ্র্য মানুষকে সংশয়ী করে তোলে। আজীবন যিনি সমাজ থেকে কোনো সহায়তা পাননি, তিনি বিশ্বাস করতে পারেন না যে কেউ তাকে বিনামূল্যে বাসস্থান, পোশাক, আহার ও চিকিৎসা দেবে। কত দিন দেবে? কেন দেবে? আসল মতলবটা কী?
প্রবীণ নিবাসের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সম্পৃক্ততা কেমন?
স্থানীয় জনগণ শৈলান প্রবীণ নিবাসকে স্বাগত জানিয়েছে এবং নানাভাবে সহায়তা করছে। দুজন স্থানীয় ব্যক্তিত্ব, এশিয়া ফাউন্ডেশনের সাবেক কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন শহীদ ও স্থানীয় এনজিও ‘সমাজ ও জাতি গঠন’ (সজাগ)-এর পরিচালক আবদুল মতিন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধান ও সার্বিক সহযোগিতা করছেন।
প্রবীণ নিবাসটি যাতে ভবিষ্যতে চালু থাকে, তা নিশ্চিত করতে কী করা প্রয়োজন?
প্রথমেই প্রবীণ নিবাস-সম্পর্কিত নেতিবাচক ধারণা দূর করা জরুরি। এটা পরিবারের বিকল্প কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। পরিবারই হচ্ছে প্রবীণদের জন্য আদর্শ স্থান। এটা কেবল সেসব পরিবারের জন্য, যারা এ দায়িত্ব পালনে নিতান্তই অক্ষম। সরকারকে প্রবীণ নিবাসের নীতিমালা প্রণয়ন করে এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ও সেবার মান নির্ধারণ করে প্রবীণদের আশ্বস্ত করতে হবে। এটা করা না গেলে দেশের এক উল্ল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী ধুঁকে ধুঁকে জীবনপাত করবে।
প্রতিষ্ঠানটিকে টেকসই করতে হলে আমাদের চারটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। এক. এর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। কেননা শৈলান প্রবীণ নিবাসের বর্তমান ট্রাস্টিদের বেশির ভাগই প্রবীণ। আগেই বলেছি, কিছু মাঝ পর্যায়ের পেশাদার নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। তারা শৈলান প্রবীণ নিবাসের শর্তগুলো বিবেচনা করে আবেদনপত্র বাছাই ও আমাদের ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে সুপারিশ করবেন। আমাদের আশা এতে তারা উদ্বুদ্ধ হবেন। এদের কেউ কেউ ভবিষ্যতে ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করবেন। দুই. স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা। আগেই এ সম্পর্কে আমি বলেছি। ভবিষ্যতেও স্থানীয়দের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। তিন. সেবার মান ধরে রাখা। এজন্য আমরা ব্যাপক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব এবং এ ধরনের প্রবীণ নিবাস পরিচালনায় অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেব। চার. অর্থায়ন নিশ্চিত করা। এজন্য প্রথমেই সেবার মান নিশ্চিত ও বাসিন্দাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। তবেই উল্লিখিত পরিচালন তহবিল গঠন ও দানশীল ব্যক্তিরা এক বা একাধিক প্রবীণের বার্ষিক খরচ দিয়ে স্পন্সর হতে এগিয়ে আসবেন। দেশে-বিদেশে শৈলান প্রবীণ নিবাসের জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রচেষ্টা সফল হবে। এ চারটি বিষয় নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি।
Read this on Newspaper : https://bonikbarta.net/home/news_description/291859/অসহায়-প্রবীণদের-কথা-ভাবতে-হবে
ই-মেইল: shailanprobeennibash@gmail.com
মুঠোফোন নম্বর: ০১৭৭১০২৭২৫৩